লামা প্রতিনিধি :: বান্দরবানের লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি লাইল্যা মুরুং পাড়ায় হাম রোগে আক্রান্তদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন নিজ উদ্যোগে আক্রান্ত ৩৩ নারী পুরুষকে উদ্ধার করে সোমবার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল, নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম আক্রান্ত রোগীদের দেখতে যান এবং চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে পাড়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও দুর্গমতার কারণে রবিবার ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এ বিষয়ে লাইল্যা মুরুং পাড়া কারবারী লাতুং মুরু বলেন, গত কয়েকদিন আগ থেকে হঠাৎ পাড়ার প্রতিঘরে ৩-৪ জন করে শিশু নারী পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আক্রান্তদের গায়ে গুটি উঠার পাশাপাশি প্রচন্ড জ্বর ও সাথে খুব কাশি হয়। ধীরে ধীরে পাড়ার মোট ৮টি পরিবারের সবাই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আমার নাতি দুতিয়া মুরুং মারা যায়। আক্রান্তরা হলেন- চংক্রং ম্রো (১৭), পাউচং ম্রো (১৫), সুলং ম্রো (১০), চিং অং ম্রো (১৯), অইরা ম্রো (২০), সংলে ম্রো (১৮), কাই ওয়া ম্রো (১৫), কাই ওয়াই ম্রো (১৯), মেন নং ম্রো (১১), কাতাই ম্রো (১৩), লংকা ম্রো (২০), তাই লিং ম্রো (১২), ওরেরিং ম্রো (১৩), দুই লু ম্রো (১১), কংরিং ম্রো (১৮), রই ম্রো (২০), রিংরয় ম্রো (১৩), তাতাই ম্রো (১১), মাছিং ম্রো (১১), তুমপাউ ম্রো (১), চিদিক ম্রো (২), রুইরাউ ম্রো (২), কাইলেম ম্রো (৫), মিপুম ম্রো (৮), কাইতন ম্রো (৬), সংসোং ম্রো (৩) মিলং ম্রো (২), মেনলং ম্রো (৫), রারুই ম্রো (২), ওরাউ ম্রো (৪) ও মেনপাউ ম্রো (১৩)।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, লাইল্যা মুরুং পাড়ায় হাম রোগে আক্রান্তের খবর রবিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর একটি মেডিকেল টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবাও প্রদান করেন। এর পরেও অবস্থার উন্নতি না হলে আক্রান্তদের উদ্ধার করে টক্টর গাড়ি যোগে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।
এই বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদুল হক বলেন, আক্রান্তদের আলাদা ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে রোগটি হাম বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রোগ নিশ্চিতের জন্য আক্রান্তদের রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত: